১৯৮০
সালে ভিক্ষুকদের মুষ্টি চালের মাধ্যমে ড. হোসনে আরা বেগমের গড়া ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ(TMSS) এখন
সারা বিশ্বের বিস্ময়।
ড. হোসনে আরা বেগম জানান, ‘১২৬ জন মহিলাদের একটি সংগঠন একদিন আমার সঙ্গে দেখা করতে এলো। ওদের বেশিরভাগ ভিক্ষুক। কেউ কেউ দেহকর্মী। ওরা বলল, আমরা মানুষের বাড়িতে ঝি-চাকরের কাজ করি। তাদের ঘর মুছে দেই, ঝাড়ু দেই। কাজে সামান্য গাফিলতি হলে ওরা আমাদের কিল-ঘুষি মারতে আসে। কিন্তু আমরা কি খাই, কিভাবে থাকি, সেই খবর ওরা রাখে না। এখন আপনিই পারেন আমাদের উদ্ধার করতে।’ হোসনে আরা এদের ঐক্যবদ্ধ করলেন। বললেন, ‘স্বাবলম্বী হতে হলে আমাদের মধ্যে ঐক্যগঠন করতে হবে। শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। যদি কেউ বড় হতে চায়, সেই জন্য নিজের মধ্যে স্বপ্ন সৃষ্টি করতে হবে।’
১২৬ জন ভিক্ষুকের মুষ্টির ২০৬ মণ চাল নিয়ে শুরু করা সেই সংঘের এখন মোট সম্পদের পরিমাণ ১৫ হাজার কোটি টাকা। বেতনভুক্ত জনবল ৩১ হাজার। উপকারভোগী পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫৩ লাখ। টিএমএসএসের আছে হাজার বেডের হাসপাতাল, ৫টি প্রাইমারি স্কুল, সরকার অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩২টি, শ্রমঘন শিল্প প্রতিষ্ঠান ২৪টি, পাঁচতারা হোটেল কাম রিসোর্ট আছে একটি, উন্নতমানের হোটেল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে ৩০টি। হেলিকপ্টার আছে দুটি। রিয়েল এস্টেট এপার্টমেন্ট আছে। আছে মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজম, সিএনজি লিমিটেডসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান।
ড. হোসনে আরা বেগম বর্তমান ব্যস্ততা ওনার এলাকায় বগুড়াতে একটি আন্তর্জাতিক মানের থিম পার্ক স্থাপনের বিষয়ে। ওয়াশিংটন ও ফ্লোরিডায় কয়েকটি আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় ও আমেরিকার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা বলেছেন তারা। আঠারোশ শতক একরের ওপর এই থিম পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হবে।
ড. হোসনে আরা বেগমের দুরদর্শী নেতৃত্বের ফসল বগুড়ার একটি প্রত্যন্ত গ্রামের নামে সৃষ্ট ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের বিশ্বময় পরিচিতি। তার দুরদর্শীতার আরো একটি প্রমাণ মিলল আরেকটি ঘটনায়। কক্সবাজারে দি প্রিন্সেস নামে তাঁর ফাইভ স্টার হোটেলে পর্যটকদের বিনামূল্যে থাকার সুযোগ করে দেবেন তিনি। তাদের কাজ হবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবেতর জীবন যাপন স্বচক্ষে দেখা। এই কাজটি তিনি মানবিক দৃষ্টভঙ্গি নিয়ে করলেও, এর পিছনে একটি সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যও আছে। ফিলিস্তিনের রামাল্লায় প্রতিবছর বহু মানুষ যায় শরণার্থী প্যালেস্টাইনিদের দেখতে। বাংলাদেশেও এখন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যা দশলাখের ওপরে। তাদের ঘিরে বিশ্বমিডিয়ার ব্যাপক আগ্রহ। তাই তাদের বোঝা মনে না করে রোহিঙ্গাদের ঘিরে এভাবে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ আছে বাংলাদেশের। বেসরকারিভাবে সেই উদ্যোগই নিয়েছে টিএমএসএস। বগুড়ার গর্ব প্রাচীন পুন্ড্র নগরের সভ্যতা পরিদর্শনের ব্যবস্থা আছে টিএমএসএসের।
এত অর্জনের পরে অত্যন্ত সাধাসিধে পোশাকে ঘরোয়া জীবনযাপন ড. হোসনে আরা বেগমের। বড় বোনের মেয়ে আয়শা বেগম, যিনি টিএমএমএসের কোষাধ্যক্ষও, যিনি তাঁর সার্বক্ষণিক সঙ্গী। জীবনের বহু উত্থান-পতন আর বাঁক পরিবর্তনেও তিনি নিজের সাদামাটা-আন্তরিক রূপটি পরিহার করেননি। ভুলে যাননি বাংলাদেশের বঞ্চিত নারীদের কথা। যে কারণে তাঁর সংগঠনের সব সদস্যই নারী।
ড. হোসনে আরা বেগমের গড়া ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ শুধু সেই দিনই না, আজো আছে সেই বিপন্ন নারীদের পাশে, আগামীতেও থাকবে।
more details
ড. হোসনে আরা বেগম জানান, ‘১২৬ জন মহিলাদের একটি সংগঠন একদিন আমার সঙ্গে দেখা করতে এলো। ওদের বেশিরভাগ ভিক্ষুক। কেউ কেউ দেহকর্মী। ওরা বলল, আমরা মানুষের বাড়িতে ঝি-চাকরের কাজ করি। তাদের ঘর মুছে দেই, ঝাড়ু দেই। কাজে সামান্য গাফিলতি হলে ওরা আমাদের কিল-ঘুষি মারতে আসে। কিন্তু আমরা কি খাই, কিভাবে থাকি, সেই খবর ওরা রাখে না। এখন আপনিই পারেন আমাদের উদ্ধার করতে।’ হোসনে আরা এদের ঐক্যবদ্ধ করলেন। বললেন, ‘স্বাবলম্বী হতে হলে আমাদের মধ্যে ঐক্যগঠন করতে হবে। শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। যদি কেউ বড় হতে চায়, সেই জন্য নিজের মধ্যে স্বপ্ন সৃষ্টি করতে হবে।’
১২৬ জন ভিক্ষুকের মুষ্টির ২০৬ মণ চাল নিয়ে শুরু করা সেই সংঘের এখন মোট সম্পদের পরিমাণ ১৫ হাজার কোটি টাকা। বেতনভুক্ত জনবল ৩১ হাজার। উপকারভোগী পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫৩ লাখ। টিএমএসএসের আছে হাজার বেডের হাসপাতাল, ৫টি প্রাইমারি স্কুল, সরকার অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩২টি, শ্রমঘন শিল্প প্রতিষ্ঠান ২৪টি, পাঁচতারা হোটেল কাম রিসোর্ট আছে একটি, উন্নতমানের হোটেল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে ৩০টি। হেলিকপ্টার আছে দুটি। রিয়েল এস্টেট এপার্টমেন্ট আছে। আছে মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজম, সিএনজি লিমিটেডসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান।
ড. হোসনে আরা বেগম বর্তমান ব্যস্ততা ওনার এলাকায় বগুড়াতে একটি আন্তর্জাতিক মানের থিম পার্ক স্থাপনের বিষয়ে। ওয়াশিংটন ও ফ্লোরিডায় কয়েকটি আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় ও আমেরিকার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা বলেছেন তারা। আঠারোশ শতক একরের ওপর এই থিম পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হবে।
ড. হোসনে আরা বেগমের দুরদর্শী নেতৃত্বের ফসল বগুড়ার একটি প্রত্যন্ত গ্রামের নামে সৃষ্ট ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের বিশ্বময় পরিচিতি। তার দুরদর্শীতার আরো একটি প্রমাণ মিলল আরেকটি ঘটনায়। কক্সবাজারে দি প্রিন্সেস নামে তাঁর ফাইভ স্টার হোটেলে পর্যটকদের বিনামূল্যে থাকার সুযোগ করে দেবেন তিনি। তাদের কাজ হবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবেতর জীবন যাপন স্বচক্ষে দেখা। এই কাজটি তিনি মানবিক দৃষ্টভঙ্গি নিয়ে করলেও, এর পিছনে একটি সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যও আছে। ফিলিস্তিনের রামাল্লায় প্রতিবছর বহু মানুষ যায় শরণার্থী প্যালেস্টাইনিদের দেখতে। বাংলাদেশেও এখন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যা দশলাখের ওপরে। তাদের ঘিরে বিশ্বমিডিয়ার ব্যাপক আগ্রহ। তাই তাদের বোঝা মনে না করে রোহিঙ্গাদের ঘিরে এভাবে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ আছে বাংলাদেশের। বেসরকারিভাবে সেই উদ্যোগই নিয়েছে টিএমএসএস। বগুড়ার গর্ব প্রাচীন পুন্ড্র নগরের সভ্যতা পরিদর্শনের ব্যবস্থা আছে টিএমএসএসের।
এত অর্জনের পরে অত্যন্ত সাধাসিধে পোশাকে ঘরোয়া জীবনযাপন ড. হোসনে আরা বেগমের। বড় বোনের মেয়ে আয়শা বেগম, যিনি টিএমএমএসের কোষাধ্যক্ষও, যিনি তাঁর সার্বক্ষণিক সঙ্গী। জীবনের বহু উত্থান-পতন আর বাঁক পরিবর্তনেও তিনি নিজের সাদামাটা-আন্তরিক রূপটি পরিহার করেননি। ভুলে যাননি বাংলাদেশের বঞ্চিত নারীদের কথা। যে কারণে তাঁর সংগঠনের সব সদস্যই নারী।
ড. হোসনে আরা বেগমের গড়া ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ শুধু সেই দিনই না, আজো আছে সেই বিপন্ন নারীদের পাশে, আগামীতেও থাকবে।
more details
No comments:
Post a Comment