মনির মিয়া, পেশায় একজন রিকশা চালক। প্রতিদিন
মালিক কে ২০০ টাকা দিয়ে যা থাকে তাই দিয়ে সংসার চলে যায় মোটামুটি , তাঁর স্ত্রী ও অন্যের বাসায় কাজ করেন ।
মনির মিয়াকে One Taka Fund থেকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম,
একটা রিকশা কিনে দেবো আমাদেরকে প্রতিদিন ১০০ টাকা দিতে হবে, রিকশার অন্যান্য খরচ সে বহন করবে। শুরুতে
আমরা তাঁকে আমাদের উদ্দেশ্যের কথা বলিনি। মনির মিয়া তাতেই মহা খুশি কারন
প্রতিদিন তাঁর কমপক্ষে ৭০/৮০ টাকা বেশী আয়
হবে (যেহেতু রিকশা মেরামতে মাঝে মাঝে কিছু খরচ হয়) এই ভেবেই।
যখন আমরা
তাঁকে বললাম ১০০ টাকা করে দিতে দিতে যেদিন রিকশার দাম উঠে যাবে আমাদেরকে আর প্রতিদিন
কোন টাকা দিতে হবেনা, মনির মিয়া মনে
হল আকাশ থেকে পড়লো, কারন এতদিন ধরে রিকশা চালাচ্ছে এমন অদ্ভুত অফার কেউ তাঁকে
দেয়নি। লাভ ছাড়া কেউ এভাবে রিকশা কিনে দিচ্ছে এটাকেই সে অনেক বড় উপকার হিসেবে
দেখছে। সে নিজেই আমাদের বলল এমন হলে সে ১৫০ টাকা করেই প্রতিদিন দিবে, সাথে এও
জিজ্ঞেস করলো আসলেই আমরা যা বলছি তা সত্যি কিনা, শুধু তাই নয় মনির মিয়া আমাদেরকে
রিকশার দাম উঠার পরেও আরও ১ মাস রিকশা চালিয়ে লাভ দিতে প্রস্তাব দিয়েছেন।
অসহায়
মানুষ গুলো অল্পতেই কত খুশি সেটা আসলে কাছ থেকে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। সে
নিজে রিকশার মালিক হবে এটাই যেন তাঁর কাছে সুখের সংজ্ঞা।সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে রিকশা
কিনবে এমন ভাবনা সেও দুয়েক বার করেছে কিন্তু কিস্তির টাকা শোধের ভয়ে সে দিকে এগুতে
সাহস করেনি।
আমরা
তাঁকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে গত ৫ই ডিসেম্বর ২০১৭ তে একটি ব্যাটারি চালিত রিকশা কিনে
দিয়েছি, পরদিন থেকেই মনির মিয়া আমাদেরকে ১৫০ টাকা করে প্রতিদিন ফেরত দিচ্ছেন। এর
মধ্যে একদিন ও কোন অজুহাত দেখায়নি যে আজকে দিতে পারছিনা এই বলে।
মাত্র
১৩৫ দিনেই মনির মিয়া রিকশার মালিক হয়ে যাবেন, তখন কখনো অসুস্থ থাকলেও নিজের রিকশা
ভাড়া দিয়েও উপার্জন করতে পারবে ।
মনির মিয়ার
এই ছোট্ট স্বপ্ন পূরণে অংশীদার হতে পেরে আমরাও খুশি, আর আমাদের প্রাপ্তি আরেকটি Story of Happiness
No comments:
Post a Comment