নাইম ভাই ঘাসের ব্যবসা করেন মানে ঘাস সংগ্রহ করে বাজারে/পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। ঘাস আটি করে বেধে ভ্যানে উঠিয়ে দেন, ভ্যান চালক সেটা পৌঁছে দেন ক্রেতার কাছে। বিনিময়ে ভ্যান চালককে ভাড়া বাবদ ৪০০/৫০০ টাকা দিতে হয়। এতে আসলে ঘাসের ব্যবসার লাভের অংশটুকু ভ্যান ভাড়াতেই সিংহভাগ চলে যায়।
তাই নাইম ভাই চাচ্ছিলেন একটা সেকেন্ড হ্যান্ড ভ্যান কিনতে পারলে নিজেই ঘাস ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন, এতে সম্পুর্ন লাভটাই নিজের থাকবে।
একটা সেকেন্ড হ্যান্ড ভ্যান কিনতেও এখন ৩০হাজারের মতো প্রয়োজন হয় যা উনার জন্য ম্যানেজ করা অনেক কঠিন। সমিতির লোন নিয়ে কিনলে সুদ-আসল মিলিয়ে যে টাকা শোধ করতে হয় তাতে খুব বেশি তফাৎ নেই বর্তমান পরিস্থিতির সাথে।
রাকিবুল হাসানের মাধ্যমে আমরা নাইমের কথা জানতে পেরে প্রস্তাব দেই যে আমরা উনাকে ভ্যান কেনার টাকাটা লোন হিসেবে দিবো কিন্তু প্রতিদিন ২০০ টাকা ফেরত দিতে হবে। আমরা এটা বলেছি এই জন্য যে এখনো উনি প্রতিদিন গড়ে ৪০০ টাকা খরচ করেন ভাড়া বাবদ, তাই ২০০ টাকা ফেরত দিতে খুব বেশি সমস্যা হবার কথা না।
কিন্তু উনি মনে করে যেন প্রথমেই রাজি হলেন না আমাদের প্রস্তাবে, উনি চাচ্ছিলেন প্রতিদিন ১৫০ টাকা করে ফেরত দিতে, তাই আমরা উনাকে বললাম কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে এই ক্ষেত্রে।
৩/৪ দিন পর উনি আবার চাইলেন ভ্যান কিনে দেয়ার জন্য, প্রতিদিন ১৫০টাকা ফেরত দিবেন। আমরা আবারো বললাম উনি কেন ২০০ টাকা করে দিতে পারবেন না এখন যেহেতু উনার প্রতিদিন ৪০০টাকা+ দিতে হয়। উনি কোন যুক্তি দেখাতে না পেরে ২০০টাকাই প্রতিদিন ফেরত দিবেন বলে রাজি হলেন।
গত ৭ই জুলাই আমরা ৩০ হাজার টাকা পাঠিয়ে সকাল সকাল। ওইদিন বিকেলেই ৩১হাজার টাকা দিয়ে ভ্যান কেনা হয়। যেহেতু ১ হাজার টাকা বেশি লেগেছে আমরা উনাকে বলেছি যেন ১১ই জুলাই থেকে আমাদের টাকা ফেরত দেয়া শুরু করেন।
সবচেয়ে খুশির খবর হচ্ছে ৮ই জুলাই সকাল বেলা ভ্যান দিয়ে ঘাস বিক্রি করে , বিকেল বেলা আবার এই ভ্যান দিয়ে উনি সৈয়দপুর বাজার থেকে পাইকারী মুল্যে মুদি পন্য কিনে এলাকার দোকানে দোকানে সাপ্লাই দিয়েছেন। মানে ভ্যানের কারনে উনি প্রথম দিন থেকেই ঘাসের ব্যবসার পাশাপাশি মুদি পন্যের ব্যবসা শুরু করেছেন।
আজ ১৬ই জুলাই ৫দিনের টাকা একত্রে ১হাজার টাকা জমা দিয়েছেন।
নাইম ভাইয়ের বদলে যাওয়া খুশির দিনই আমাদের Story of Happiness
No comments:
Post a Comment